ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২১:৫৭ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৮ বার
চাঁদপুর: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ) আসনে একটি ভিডিও ফুটেজকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক চাঞ্চল্য ও সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।
২১ ডিসেম্বর দিনগত রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (ফেসবুক) ছড়িয়ে পড়া ১৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মতলব উত্তর উপজেলার ফরাজিকান্দি ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক নাজমুল হাসান গাজী প্রকাশ্যে হুমকিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, আমাদের ওয়ার্ড হচ্ছে ৭ নম্বর ওয়ার্ড, ধানের শীষের বাইরে গেলে কারো পিঠের চামড়া রাখব না (কারো বাকলা রাখব না-আঞ্চলিক ভাষা)।
চাঁদপুর-২ আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থীর পক্ষে ফরাজিকান্দি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে কেন্দ্র কমিটি গঠনের সময় ওই বক্তব্য দেন তিনি।
ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যেই শুরু হয় তীব্র সমালোচনা।
উপজেলার জহিরাবাদ ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি মোবারক হোসেন ভিডিওটি নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে শেয়ার করে লিখেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্লোগান হলো, শক্তি কিংবা ভয় দেখিয়ে নয়, ইনসাফ ও উদারতা দিয়ে মানুষের মন জয় করুন। আর এখানে বলা হচ্ছে ‘বাকলা রাখব না’। এটা কার আদর্শ?
এদিকে গজরা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম বাবু তার প্রতিক্রিয়ায় লিখেন, বিএনপির বাইরে কেউ ভোট দিতে পারবে না।
এ ধরনের বক্তব্য শুধু গণতন্ত্রবিরোধী নয়, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শেরও সম্পূর্ণ পরিপন্থী। ভোট যার, সিদ্ধান্ত তার এটাই বিএনপির রাজনীতি।
তিনি আরও লিখেন, এমন বক্তব্য দিয়ে যারা দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে, তারা প্রকৃতপক্ষে বিএনপির কর্মী নয়; বরং দলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এ ঘটনায় নির্বাচন কমিশন, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও মতলব উত্তর থানা পুলিশের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
এদিকে ভিডিওটিকে কেন্দ্র করে চাঁদপুর-২ আসনে নির্বাচনপূর্ব রাজনৈতিক পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। সাধারণ ভোটারদের মধ্যে স্বাধীনভাবে ভোট দেওয়ার অধিকার নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে ফরাজিকান্দি ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক নাজমুল হাসান গাজীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে মতলব উত্তর উপজেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রাশেদ জামান টিপু বলেন, বিষয়টি আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি। জেলা যুবদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
যুবদল কখনোই শৃঙ্খলাবিরোধী আচরণ বা হুমকিমূলক রাজনীতিকে সমর্থন করে না। এ ধরনের বক্তব্য দলীয় আদর্শের পরিপন্থী।
চাঁদপুর জেলা যুবদলের সভাপতি মানিকুর রহমান মানিক এ বিষয়ে বলেন, এ ধরনের বক্তব্য দলের আদর্শ ও নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বিষয়টি তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট নেতার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভবিষ্যতে কেউ যেন এমন বক্তব্য দিতে না পারে, সে বিষয়ে আমরা কঠোর অবস্থানে আছি।