আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৩:৪৬ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৩ বার
গ্রিনল্যান্ডের জন্য বিশেষ দূত হিসেবে লুইজিয়ানার গভর্নর জেফ ল্যান্ড্রিকে নিয়োগ দেওয়ার পর আবারও দ্বীপটি নিয়ে আগ্রাসী অবস্থান নিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
বিবিসিকে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গ্রিনল্যান্ড প্রয়োজন এবং “আমাদের এটা অবশ্যই রাখতে হবে”।
ডেনমার্কের অংশ হলেও আধা-স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গ্রিনল্যান্ড নিয়ে এই মন্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে কোপেনহেগেন। ডেনমার্ক জানিয়েছে, বিষয়টির ব্যাখ্যা জানতে তারা ওয়াশিংটনের রাষ্ট্রদূতকে তলব করবে।
অন্যদিকে গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেন্স–ফ্রেডেরিক নিলসেন বলেছেন, দ্বীপটির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে তার জনগণই এবং ভৌগোলিক অখণ্ডতা অবশ্যই সম্মান করতে হবে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গভর্নর ল্যান্ড্রি দাবি করেছেন, গ্রিনল্যান্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের অংশ করতে সহায়তা করাই তার দায়িত্ব। তবে জনমত জরিপে দেখা গেছে, অধিকাংশ গ্রিনল্যান্ডবাসী যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার বিপক্ষে।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেয়েন ডেনমার্ক ও গ্রিনল্যান্ডের প্রতি পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করেছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, আর্কটিক অঞ্চলে প্রভাব বিস্তার এবং ‘পশ্চিম গোলার্ধে’ আধিপত্য প্রতিষ্ঠার বৃহত্তর কৌশলের অংশ হিসেবেই ট্রাম্প প্রশাসন গ্রিনল্যান্ড ইস্যুতে চাপ বাড়াচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত ল্যান্ড্রি এর আগে মার্কিন কংগ্রেস সদস্য এবং লুইজিয়ানার অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন। ২০২৩ সালে তিনি গভর্নর নির্বাচিত হন। তিনি বলেছেন, এই নতুন দায়িত্ব তার গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালনে প্রভাব ফেলবে না।
এই নিয়োগ নিয়ে বিরোধ এমন এক সময়ে দেখা দিয়েছে, যখন আর্কটিক অঞ্চলে কৌশলগত প্রতিযোগিতা বাড়ছে। বরফ গলে নতুন নৌপথ খুলে যাওয়ায় এবং মূল্যবান খনিজ সম্পদে প্রবেশাধিকার বাড়ায় অঞ্চলটির গুরুত্ব আরও বেড়েছে।
উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের মাঝামাঝি আর্কটিক অঞ্চলে অবস্থিত গ্রিনল্যান্ড, যা যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর নিরাপত্তা পরিকল্পনায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে গ্রিনল্যান্ডে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। নাৎসিরা ডেনমার্ক দখল করার পর যুক্তরাষ্ট্র ওই অঞ্চলে সামরিক ও রেডিও স্টেশন স্থাপনের জন্য সেখানে প্রবেশ করেছিল।
গত মার্চে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস–প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ওই ঘাঁটি পরিদর্শন করেন এবং গ্রিনল্যান্ডবাসীদের ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতায় আসতে’ আহ্বান জানান।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্র গ্রিনল্যান্ডের রাজধানী নুক–এ তাদের কনস্যুলেট পুনরায় চালু করে। এর আগে ১৯৫৩ সালে সেটি বন্ধ করা হয়েছিল। ইউরোপের কয়েকটি দেশ এবং কানাডারও গ্রিনল্যান্ডে সম্মানসূচক কনস্যুলেট রয়েছে।
সূত্র: বিবিসি