ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১০:৩২ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৪৯ বার
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, ‘আমরা বাংলাদেশে যত সংস্কার চাই না কেন, ততটুকু সংস্কার হবে যতটুকু বাংলাদেশের আমলাতন্ত্র চায়। সবকটি সংস্কার কমিশন থেকেই আশু বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশ দেওয়া হয়েছিল অন্তর্বর্তী সরকারকে। কিন্তু বাস্তবায়ন করা হয় নাই। তাহলে শুধু রাজনৈতিক শক্তিকে দায় দিয়ে কী লাভ?’
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডি মাইডাস সেন্টারে আয়োজিত দুর্নীতিবিষয়ক অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কার-২০২৫ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের গণমাধ্যম পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের ডেপুটি কো-অর্ডিনেটর জাফর সাদিক।
এতে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সব সুপারিশ অনতিবিলম্বে বাস্তবায়নসহ ১২ দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয়। যার মধ্যে রয়েছে-কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী সাংবাদিকতার অধিকার সুরক্ষা অধ্যাদেশ করতে হবে, প্রেস কাউন্সিল বিলুপ্ত করে স্বাধীন জাতীয় গণমাধ্যম কমিশন গঠন করতে হবে, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সব গণমাধ্যমকে জাতীয় বা বাংলাদেশ সম্প্রচার সংস্থা গঠন করে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন দিতে হবে।
সাংবাদিকদের আর্থিক নিরাপত্তা শ্রম আইন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী করতে হবে, নিয়মিত বেতন-ভাতা দেওয়ার পাশাপাশি চাকরির সুরক্ষা ও নিরাপত্তা প্রদান করতে হবে, মাঝারি ও বৃহৎ গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত করে সবার জন্য শেয়ার ওপেন করে দিতে হবে, ছোট আকারের প্রতিষ্ঠান কর্মীদের শেয়ার প্রদান বাধ্যতামূলক করতে হবে। ভুয়া ও অপতথ্য মোকাবিলায় প্রতিটি গণমাধ্যমের নিউজরুমে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি প্রবর্তন করতে হবে। প্রয়োজনে ফ্যাক্ট চেকার পদে প্রশিক্ষিত ও দক্ষ একাধিক কর্মী নিয়োগ দিতে হবে। প্রতিনিয়ত ভুয়া ও অপতথ্য, গুজব ও মিথ্যা সংবাদ প্রচারকারী সব গণমাধ্যমকে (অনলাইন পোর্টাল ও মেটার সব প্ল্যাটফর্মে) প্রাথমিকভাবে সতর্কতা ও জরিমানাসহ লঘু দণ্ডের পরও অপরাধের পুনরাবৃত্তি করলে কিংবা মালিকপক্ষ অপ্রকাশিত থাকলে সেগুলো বন্ধ করে দিয়ে মালিকসহ সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে প্রযোজ্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
ফটোকার্ড তৈরি ও প্রচারের নির্দিষ্ট মানদণ্ড তৈরি করতে হবে। প্রয়োজনে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের সংবাদ সংবলিত ফটোকার্ডগুলোতে কিউআর কোড সিস্টেম বা যে কোনো পরিচয়সূচক চিহ্ন রাখতে হবে, যেন সহজেই যাচাই করা যায়।
গণমাধ্যমকে নারী, আদিবাসী, সংখ্যালঘু বিষয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক হতে হবে এবং পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করা যাবে না। সব প্রকার ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক উসকানি এবং যে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী হামলা-আঘাত থেকে সব গণমাধ্যমকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সুরক্ষা প্রদান করতে হবে। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সব প্রকার হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করে, স্বাধীন সাংবাদিকতার পথ সুগম করতে হবে।