ঢাকা, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র

ডেস্ক রিপোর্ট


প্রকাশ: ২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১১:৫০ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৩০ বার


দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র

 

দৈনিক প্রথম আলো, ডেইলি স্টার পত্রিকা ভবন এবং ছায়ানটে হামলা, ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনাকে আসন্ন সংসদ নির্বাচন বানচাল এবং দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন বিএনপি, জামায়াত, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। 

 

আগামী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গত ১২ ডিসেম্বর জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। ১৮ ডিসেম্বর রাতে সিঙ্গাপুর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওসমান হাদির মৃত্যুর পর ক্ষোভে ফুঁসে উঠে গোটা দেশ। বিক্ষুব্ধ জনতার ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে একটি মহল ওই রাতে দৈনিক প্রথম আলো, ডেইলি স্টার পত্রিকা ভবন, ছায়ানটে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।

 

 

দুই গণমাধ্যম এবং ছায়ানটে হামলার পর রাজনৈতিক থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ নিন্দা জানিয়েছেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা এ ঘটনাকে আসন্ন নির্বাচন বানচাল এবং দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন।

 

শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটি জরুরি বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, একটি চিহ্নিত মহল দেশকে পরিকল্পিতভাবে নৈরাজ্যের পথে ধাবিত করতে চায়।

 

ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ড, দুই পত্রিকায় হামলাসহ সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এসব ঘটনা নির্বাচন তথা গণতান্ত্রিক উত্তরণের প্রক্রিয়াকে অনিশ্চিত করার ষড়যন্ত্র বলে মনে করছি।

 

মির্জা ফখরুল বলেন, অনেক রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের ভোটাধিকার তথা গণতান্ত্রিক অধিকারকে তারা নস্যাৎ করে দিয়ে দেশে ফ্যাসিবাদের একটি নতুন সংস্করণ তৈরি করতে চাচ্ছে। সরকারের নাকের ডগাতেই তারা এ তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। জনগণও মনে করছে সরকারের অবস্থান সন্তোষজনক নয়। 

 

বিএনপির এ বৈঠকে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন।

 

 

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলা নির্বাচন বানচালের কোনো অপকৌশল কি না, তা খতিয়ে দেখতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।

 

শুক্রবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের সামনে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এগুলোর মধ্য দিয়ে সারা দেশে একটা অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করা যায় কি না, সেইটার একটা পরিকল্পনা বা অপকৌশলের কোনো বিষয় আছে কি না, সেটি খতিয়ে দেখা দরকার।

 

যুক্তরাজ্য সফররত জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান শুক্রবার সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে বলেন, প্রথম আলো, ডেইলি স্টার এবং প্রবীণ সম্পাদক নুরুল কবিরের ওপর হামলা, হাইকমিশন কার্যালয়সহ কয়েকটি কালচারাল সেন্টারে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং ময়মনসিংহে এক হিন্দু যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান।

 

জামায়াত আমির বলেন, এসব ঘটনা পরিকল্পিত উপায়ে স্যাবোটাজ করার জন্যই কোনো পক্ষ এ কাজ করে থাকবে বলে আমাদের ধারণা।

 

এসব ঘটনা বন্ধে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কার‌্যকর উদ্যোগ না নেওয়ার সমালোচনা করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ঘটনা ঘটার পূর্বে কোনো সতর্কতামূলক ব্যবস্থা না নেওয়া এবং ঘটনা শুরু হওয়ার দীর্ঘ সময় পরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এগিয়ে না আসা প্রমাণ করে- প্রশাসনের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা দোসররা এই স্যাবোটাজ পরিকল্পনার অংশ হয়ে থাকতে পারে।

 

 

দেশবাসীকে আরও সতর্ক এবং সবাইকে বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে জামায়াত আমির বলেন, কেউ যেন স্যাবোটাজ করার সুযোগ না পায়। দেশকে অস্থি/তিশীল করার এক গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। বিভাজনের সুযোগ নিয়েই আধিপত্যবাদ আমাদের ওপর সওয়ার হয়। আসুন, বিভেদ ভুলে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলি। দেশের সুরক্ষায় একযোগে কাজ করি।

 

দৈনিক প্রথম আলো অফিস পরিদর্শন শেষে গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের মুখপাত্র ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা নির্বাচনের দিকেই যাচ্ছিলাম। সেই নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে এই ধরনের যোগসাজশ, কারসাজি হতে পারে।

 

হামলায় সরকারের ভেতরের একটি মহলের সংশ্লিষ্টতা বিষয়ে তিনি বলেন, সরকারের যে নিষ্ক্রিয়তা আমরা দেখতে পেয়েছি, সরকারের একটা অংশের সংশ্লিষ্টতা ছাড়া, তাদের পরিকল্পনা ছাড়া এটা সম্ভব হতো না। কারণ এটাই প্রথম ঘটনা নয়, এর আগেও এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে।

 

সরকারের ভেতরে কারা সংশ্লিষ্ট এমন প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইসলাম বলেন, প্রশাসনের ভেতরে কিন্তু ফ্যাসিস্ট আমলের লোকজন রয়ে গেছে। তারা কিন্তু বার বার চেষ্টা করছে এই সরকার, গণঅভ্যুত্থান যেন ব্যর্থ হয়। আমরা যাতে গণতান্ত্রিক ভাবে উত্তরণটা করতে না পারি।

 

প্রথম আলো ভবন পরিদর্শন শেষে গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের নেতা বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইয়ূম বলেন, একটা পর্যায় তৈরি করার চেষ্টা করতেছে যেখান থেকে মানুষ বলবে আগেই ভালো ছিলাম। এই ধরনের চক্রান্ত ষড়যন্ত্র যারা পতিত স্বৈরাচারের সঙ্গে মিলে করছে তারা সংখ্যায় খুবই কম মানুষ। তাদের আধুনিক যুগে ফুটেজ দিয়ে চিহ্নিত করা সম্ভব। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।

 

গত ১১ ডিসেম্বর আগামী জাতীয় নির্বাচন এবং গণভোটের তফসিল ঘোষণ প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। তফসিল অনুযায়ী আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে বিভিন্ন আসনে নির্বাচনে প্রার্থীরা মনোনয়ন ফরম


   আরও সংবাদ