নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৪:২৪ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৫৮ বার
নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশে ক্রিপ্টোকারেন্সি ও ফরেক্স ট্রেডিং আইনত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও সম্প্রতি এ খাতকে কেন্দ্র করে নতুন এক তৎপরতার তথ্য সামনে আসছে। অনুসন্ধানে পাওয়া বিভিন্ন তথ্য, ভিডিও ফুটেজ ও আর্থিক লেনদেনের আলামত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে—মুজিব, নাজমুল, ফারুক ও নজরুল নামের চার ব্যক্তি মিলে একটি তথাকথিত ক্রিপ্টোকারেন্সি সফটওয়্যার ও বিনিয়োগ কার্যক্রম চালু করেছে।
এই কার্যক্রমের বয়স মাত্র দুই মাস হলেও এর মধ্যেই কোটি টাকার কাছাকাছি অর্থ লেনদেনের আলামত পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর ভাষ্য অনুযায়ী, এসব অর্থের একটি বড় অংশ মোবাইল ব্যাংকিং ও বিভিন্ন ডিজিটাল চ্যানেলের মাধ্যমে আদান-প্রদান হয়েছে, যা অর্থ পাচারের ঝুঁকি তৈরি করছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই চক্রটি বিভিন্ন এলাকায় নামী রেস্টুরেন্টে প্রোগ্রাম আয়োজন করছিল। এসব প্রোগ্রামে অংশগ্রহণকারীদের জন্য খাবার ও আপ্যায়নের পাশাপাশি আকর্ষণীয় উপস্থাপনার মাধ্যমে ক্রিপ্টোকারেন্সি ও ফরেক্স ট্রেডিংয়ে বিনিয়োগে উৎসাহিত করা হতো।
প্রোগ্রামগুলোতে অংশগ্রহণকারীদের বলা হয়,
অল্প সময়ের মধ্যে উচ্চ মুনাফা
আন্তর্জাতিক মার্কেটের সঙ্গে সংযুক্ত সফটওয়্যার
ঝুঁকিমুক্ত ও স্বয়ংক্রিয় আয় ব্যবস্থা
বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের বক্তব্য বাস্তবতা ও বিদ্যমান আইনগত কাঠামোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
আমাদের হাতে আসা ভিডিও ও নথিপত্রে দেখা যায়, একাধিক বৈঠকে নগদ অর্থ প্রদর্শন, মোবাইল ব্যাংকিং ট্রান্সফার এবং বিনিয়োগ সংক্রান্ত আলোচনা হচ্ছে। এসব লেনদেনের চূড়ান্ত গন্তব্য ও ব্যবহার সম্পর্কে সুস্পষ্ট তথ্য না থাকায় অর্থ দেশের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
অর্থনীতি বিশ্লেষকদের মতে, ক্রিপ্টোকারেন্সির নামে এ ধরনের কার্যক্রম অনেক ক্ষেত্রেই অর্থ পাচারের একটি সম্ভাব্য মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে, যা দেশের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো একাধিকবার স্পষ্টভাবে জানিয়েছে—দেশে ক্রিপ্টোকারেন্সি, বিটকয়েন ও ফরেক্স ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন আইনবিরোধী।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন,
“যেখানে কোনো বিনিয়োগকে ঝুঁকিমুক্ত বলা হয় এবং দ্রুত লাভের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়, সেখানে বড় ধরনের আর্থিক প্রতারণা বা অবৈধ কার্যক্রমের ঝুঁকি থেকেই যায়।”
প্রশাসনের নজরদারিতে রয়েছে এরা, ইতোমধ্যে তাদের মোবাইল নম্বর, লোকেশন সংগ্রহ করা হয়েছে৷ যে কোন সময় প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানা গেছে।
নিষিদ্ধ ক্রিপ্টোকারেন্সি ও ফরেক্স ট্রেডিংয়ের নামে পরিচালিত যেকোনো কার্যক্রম সাধারণ মানুষের জন্য মারাত্মক আর্থিক ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। কোটি টাকার লেনদেনের আলামত ও বিদেশে অর্থ পাচারের আশঙ্কা সামনে আসায় বিষয়টি গভীর অনুসন্ধান ও জনসচেতনতার দাবি রাখে।
বিশেষজ্ঞদের আহ্বান—যাচাই-বাছাই ছাড়া কোনো ধরনের ডিজিটাল বিনিয়োগে যুক্ত না হয়ে সবাইকে সতর্ক থাকা উচিত।